আমরা নারী- আমরা সব পারি : ‘ত্বরান্বিত পদক্ষেপ’ এর আলোকে বিশ্ব নারী দিবস ,২৫

নারীর উন্নতিকে সম্মান জানাতে এবং স্ত্রী-পুরুষ ভেদাভেদের উর্ধ্বে গিয়ে লিঙ্গ সমতার পক্ষে সমর্থন জানাতে সারা বিশ্ব জুড়ে প্রতিবছর এই ৮ ই মার্চ দিনটি “আন্তর্জাতিক নারী দিবস” হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। বিশ্বব্যাপী পালিত এই নারী দিবস বা “International Women’s Day”-এর যাত্রা কিভাবে শুরু হয়েছিল কিভাবে ?

আন্তর্জাতিক নারী দিবস – এর লড়াইটা বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে শ্রমিক আন্দোলনের সময় থেকেই শুরু হয়। সালটা ১৯০৮ নিউইয়র্ক সিটিতে উন্নত কর্মপরিবেশ , ন্যায্যমজুরি সহ ভোটাধিকারের দাবিতে প্রায় ১৫,০০০ হাজার নারী মিছিল করেন। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা আমেরিকার সমাজতান্ত্রিক দল  প্রথম ১৯০৯ সালের ২৮ শে ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় নারী দিবস” ঘোষণা করে। জার্মান কর্মী কিলারা জেটকিন কোপেনহেগেনে ১৯১০ সালে আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সম্মেলনে  বার্ষিক আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রস্তাব জানান , পরবর্তীতে ১৯১১ সালের ১৯ মার্চ প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে “আন্তর্জাতিক নারী দিবস” পালিত হয়, অস্ট্রিয়া জার্মানি , ডেনমার্ক সহ সুইজারল্যান্ডেও । এরপর ১৯৭৫ সালের মধ্যে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে ৮ ই মার্চ দিনটিকেই  ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’  হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন।

          সূচনা লগ্ন থেকে শুরু করে আজ অব্দি নারীদের লড়াই অবিরাম , অক্লান্ত। এবছর তথা ২০২৫ সালে “সকল নারী ও মেয়েদের জন্যে থিম : অধিকার, সমতা এবং ক্ষমতায়নের”, যা সমগ্র বিশ্বব্যাপী নারী এবং মেয়েদের উন্নতির অগ্রগতির পথে পরাধীনতার বাধা, পদ্ধতিগত বাধা সহ সকল বাধা গুলিকে গুঁড়িয়ে দিয়ে তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা কে তুলে ধরে। এবছর ৮ ই মার্চের মূল থিম : “অ্যাক্সেলারেট অ্যাকশন” অর্থাৎ   “ত্বরান্বিত পদক্ষেপ” যেটি  লিঙ্গ সমতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপর জোর দেয়। সারা দেশ , বিদেশ জুরে নারীদের দমন করে, এহেন  পদ্ধতিগত বাধা এবং মেয়েদের ক্ষমতায়নের প্রতি সিদ্ধান্ত মূলক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতি আহ্বান জানায়। এটি ব্যক্তি , সম্প্রদায় এবং সংস্থাগুলির কার্যকর কৌশল গুলি বাস্তবায়ন করা এবং নারীর অগ্রগতির লক্ষ্যকে উৎসাহ প্রদান করতে সাহায্য করে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মত অনুযায়ী, বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণরূপে লিঙ্গ সমতা অর্জন করতে এখন থেকে প্রায় পাঁচ প্রজন্ম অর্থাৎ ২১৫৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

                  বিংশ শতাব্দীর গোড়া থেকে শুরু হওয়া নারী ক্ষমতায়নের লড়াই আজও বহাল রয়েছে সর্বক্ষেত্রেই, ঘর থেকে বাহির সর্বত্রই সমতা- অধিকার – ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠার জন্য অদৃশ্য লড়াই চালিয়ে যেতে হয় নারীদের। তাও সুবিচার মেলে কি? এই সুপ্ত লড়াই ছিল , আছে, থাকবে , যতদিন না বিশ্বের প্রত্যেকটি নারী যোগ্য সুবিচার – অধিকার- সমতা- ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে। আর বিশ্বজুড়ে উদযাপিত এই নারী দিবস সেদিনই সার্থক হবে যেদিন স্বাধিকারে ও সসম্মানে নারীদের বাসযোগ্য হবে এই ধরিত্রী বৈকি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *