আ মরি বাংলা ভাষা : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ স্মরণে কলকাতা হাইকোটের অভিনব উদ্যোগ

এবছর  বাংলাদেশে অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির ফলে এবার দুই দেশের যৌথ ভাষা দিবস উযাপন অনেকাংশেই ফিকে  । তবে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরেও  রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ও প্রতিষ্ঠানে  ভাষা দিবস উদযাপন কর্মসূচি রয়েছে ।তবে  এবার সেই কর্মসূচিতে নতুন সংযোজন বৈকি ! এই দিনটিতে এক  অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।আজ  বাংলা ভাষাতেই দিনভর শুনানি হবে কলকাতা হাইকোর্টে।‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা’ দিবসে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধায় গোটা দিনটি  বাংলায় শুনানি প্রক্রিয়া চালাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন  বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।বৃহস্পতিবার নিজের এজলাসে বসেই  মামলার শুনানি চলাকালীন  তিনি  এই  ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।

আজ  বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান জানাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  গোটা দিন ধরে বাংলাতেই চলবে শুনানি। যদিও  কলকাতা হাই কোর্টের জন্মলগ্ন থেকে ইংরেজিতেই শুনানি প্রক্রিয়া চলে আসছে। শুধু তাই নয় , দেশের সকল  হাই কোর্ট এবং  সুপ্রিম কোর্টে ইংরেজিতেই শুনানি এবং রায় দেওয়া হয়  । সেক্ষেত্রে এটা কীভাবে সম্ভব হবে তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই  উঠছে প্রশ্ন ।হাইকোর্টের অনেক আইনজীবীই যেহেতু বাংলা বলতে পারেন না, সে ক্ষেত্রে  বাংলায় শুনানি হওয়া সম্ভব কিভাবে ? আবার সওয়াল-জবাব বাংলায় দেওয়া হলেও নির্দেশ ও রায় দেওয়া হবে ইংরেজিতে। আদালত সূত্রে পাওয়া  খবর অনুযায়ী বাংলায় কথা বলা বাধ্যতামূলক নয়।  যে সব আইনজীবীরা বলতে পারেন না, তাঁরা চাইলে ইংরেজিতেই  সওয়াল করতে পারবেন।

শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি, প্রসঙ্গত সাধারণত কলকাতা হাই কোর্টে শুনানির কাজ হয় ইংরেজিতে। ইংরেজিতেই কথা বলতে হয় আইনজীবীদের। কিন্তু এখন দেশের বেশ কিছু হাইকোর্টের আইনজীবীদের ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দিতেও সওয়াল করতে দেখা যাচ্ছে। তবে কলকাতা হাইকোর্ট এ ক্ষেত্রে একটু স্বতন্ত্র।সাধারণ এখানে ইংরেজিতে সওয়াল জবাব হয়ে থাকে। শুধুমাত্র সাধারণের বোঝার সুবিধার্থে বেশ কিছু নির্দেশনামা বাংলাতেও তর্জমা করে দেওয়া হয়। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার নির্দেশনামাও বাংলা-সহ অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষায় প্রকাশিত হয়।

আজ  বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান জানাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের ১৯ নম্বর কক্ষের এজলাসে গোটা দিন ধরে যত মামলা উঠবে,বাংলাতেই সবগুলির শুনানি হবে। এভাবেই মাতৃ ভাষা এবং ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। যদিও  কলকাতা হাই কোর্টের জন্মলগ্ন থেকে ইংরেজিতেই শুনানি প্রক্রিয়া চলে আসছে। শুধু তাই নয় , দেশের সকল  হাই কোর্ট এবং  সুপ্রিম কোর্টে ইংরেজিতেই শুনানি এবং রায় দেওয়া হয়  । সেক্ষেত্রে এটা কীভাবে সম্ভব হবে তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই  উঠছে প্রশ্ন ।হাইকোর্টের অনেক আইনজীবীই যেহেতু বাংলা বলতে পারেন না, সে ক্ষেত্রে  বাংলায় শুনানি হওয়া সম্ভব কিভাবে ? আবার সওয়াল-জবাব বাংলায় দেওয়া হলেও নির্দেশ ও রায় দেওয়া হবে ইংরেজিতে। আদালত সূত্রে পাওয়া  খবর অনুযায়ী বাংলায় কথা বলা বাধ্যতামূলক নয়।  যে সব আইনজীবীরা বলতে পারেন না, তাঁরা চাইলে ইংরেজিতেই  সওয়াল করতে পারবেন।

তবে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য  কলকাতা হাইকোর্টে এই প্রচেষ্টা প্রথম নয়। বিচারপতি থাকাকালীন একবার গোটা দিন বাংলায় শুনানি করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এ বিষয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল ,যেহেতু  এজলাসে আসা অনেকেই ইংরেজি জানেন না ফলে আদালতে কী হচ্ছে তারা তা বুঝতে পারেন না। সেজন্য বাংলা ভাষাতেই মামলার শুনানি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *