যুগবীক্ষণ ডিজিটাল নিউজ ডেস্ক :
Authored by : Tista Mondal ●Digital presentation by : Laboni De

কলকাতা , ৪ ডিসেম্বর : প্রাথমিকের ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ খারিজ করে দিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৪ সালে TET – এর ভিত্তিতে ২০১৬ সালে প্রাথমিকে প্রায় ৪২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। এরপর ওই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে বেনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এরপর বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। তাদের অভিযোগ ছিল, ২০১৪ সালের টেটে উত্তীর্ণ হয়ে, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা কিন্তু তার সত্বেও ইন্টারভিউতে ডাক পাননি, চাকরি হয়নি শেষ পর্যন্ত। এই মামলায় ২০২৩ সালের ১২ মে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
সিঙ্গেল বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যান প্রাথমিক শিক্ষাপর্ষদ এবং চাকরিহারারা। এই রায়ের উপর অন্তরবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এক্ষেত্রে রায়ে বিচারপতিরা জানিয়েছিলেন সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ মতো নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে পর্ষদ কে এবং নিয়োগের সময়সীমা তিনমাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। নিয়োগের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কার্যত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় প্রাথমিক শিক্ষাপর্ষদ। নতুন করে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের যে নির্দেশ হাইকোর্ট দিয়েছিল তার উপর স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। এরপর মামলা ঘুরে যযায় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে, কিন্তু শুনানির আগে সরে দাঁড়ান বিচারপতি। ফলে এরপর মামলা যায় বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রর ডিভিশন বেঞ্চে। ১২ নভেম্বর শেষ হয় মামলার শুনানি। কার্যত এরপর সকলেরই নজর ছিল রায়দানের ওপর। বুধবার প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বহাল রেখে ডিভিশন বেঞ্চে চাকরি বাতিলের রায় খারিজ করলো কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায় দানের পর আদালত জানিয়েছে, দুর্নীতি হয়েছে বলেই সকলের চাকরি বাতিল করা যায় না। ২০১৬ থেকে ২০২৫ ন’বছর চাকরি করার পর যদি কারোও চাকরি বাতিল হয় এক্ষেত্রে তাদের এবং তাদের পরিবারের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। চাকরি হারা সহ পরিবার সমস্যায় পড়বে বাঁচা মুশকিল হয়ে যাবে। তাই কারোও চাকরি বাতিল হচ্ছে না প্রত্যেকের চাকরি বহাল থাকছে।
স্বাভাবিক ভাবেই আদালতের এই রায়দানে বিরাট স্বস্তি এনে দিয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে।রায় দানের পর বিভিন্ন জায়গায় বিপুল আনন্দ উছ্বাসে মেতে উঠতে দেখা গেছে তাদের।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কথায় কথায় আদালতে গিয়ে চাকরি খেয়ে নেওয়ার বিষয়টা ঠিক নয়। আমাদের লক্ষ্য চাকরি দেওয়া, মোটেও চাকরি কেড়ে নেওয়া নয়।’●