বন্যেরা বনে সুন্দর…অন্যেরা তাদের রক্ষায়…

কলকাতা, ৩ মার্চ :

“বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃ ক্রোড়ে “
শিশুদের যেমন মাতৃকোলে সবচেয়ে বেশি শোভাপায় ঠিক তেমনই বন্যপ্রাণীদেরও প্রাণোচ্ছল ও শোভাময়তা বৃদ্ধি পায় বনের সুন্দর পরিবেশেই। বর্তমান হাইটেক যুগে দাঁড়িয়ে পৃথিবী যত আধুনিকতার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে ততই ক্রমশ কমতে থাকছে বনভূমির প্রাদুর্ভাব,স্বাভাবিকভাবে একই সঙ্গে নষ্ট হচ্ছে বন্যপ্রাণীদের বাসস্থানও।এর ফলস্বরূপ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণীরা। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ থেকে পাওয়া এক প্রতিবেদন মারফত জানা যায় যে , ১৯৭০ সাল থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত বিশ্ব বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমে হয়েছে প্রায় দুই- তৃতীয়াংশ। ১৯৭৩ সালে বিপন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত সম্মেলন স্বাক্ষরের দিনটিকেই ‘বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস’ হিসেবে বিবেচিত করা হয়।
বিশ্বের উদ্ভিদকুল সহ বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষা এবং সংরক্ষণের বিষয়টি মাথায় রেখেই গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৩ সালে ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ৬৮ তম সাধারণ অধিবেশনে আন্তর্জাতিক বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদের বাণিজ্য সম্মেলনে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে সর্বপ্রথম ৩ রা মার্চ দিনটিকেই ‘বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস’ হিসেবে বিবেচিত করার কথা উল্লেখ করা হয়। এরপর ২০১৪ সাল থেকে প্রতিবছর এই দিনটি অর্থাৎ ৩রা মার্চ জাতিসংঘ অধ্যুষিত দেশগুলিতে ‘বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস’ হিসেবে উদযাপিত হয়।
বন্যপ্রাণী বলতে সাধারণত যে সমস্ত প্রাণীরা বনে , জঙ্গলে বসবাস করে বা যারা বন্য পরিবেশের জীব এবং একই সঙ্গে আমরা আমাদের চারপাশে উপস্থিত যে সকল প্রাণীদেরকে প্রতিনিয়ত দেখতে পাই তারা সকলেই বন্যপ্রাণী।

বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে বন্যপ্রাণীর ব্যাপক বিলুপ্তি ঘটছে, বাড়ছে তাদের অস্তিত্বের সংকট।নগরায়নের ফলে ধ্বংস হচ্ছে বন যার ফলস্বরূপ হ্রাস পাচ্ছে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা এবং সংকট ঘটছে তাদের বাসস্থানের, খাবারের এবং সর্বোপরি বেঁচে থাকার জন্য তাদের যে সুরক্ষার প্রয়োজন তা ব্যাহত হচ্ছে। বাণিজ্যিক করনের জন্য বন্যপ্রাণী শিকার করা, বাচ্চা বিক্রি , ভিনদেশে বিক্রির ফলে বন্যপ্রাণীর সংকট ঘটছে। এর কারণে সৃষ্টি হচ্ছে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির। বন এর পরিবেশ এবং পরিস্থিতির পরিচ্ছন্নতা বা স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হচ্ছে, এর কারণ হলো বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থলে মানুষজনের নিয়ন্ত্রণহীন ভ্রমণযাত্রা , প্রবেশ বৃদ্ধির ফলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাড়ছে।এক্ষেত্রে পরিবেশ দূষণ ও একটি অন্যতম কারণ, অত্যাধিক পরিমাণে বায়ু দূষণের ফলে বন্যপ্রাণীর স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিস্থিতির ভারসাম্যতা হারিয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, এবছর তথা ২০২৫ সালের ‘বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস’ বা ৩ রা মার্চের থিম হল , “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অথায়ন: মানুষও গ্রহের উপর বিনিয়োগ”। এই থিমের মূল উদ্দেশ্য হলো, বন্যপ্রাণীদের বাসযোগ্যতা বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে তাদের টেকসই সংরক্ষণ ও সুস্থতা বজায় রাখার উপর দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *