যুগবীক্ষণ ডিজিটাল নিউজ ব্যুরো:
প্রতিবেদন : তিস্তা মন্ডল ● ডিজিটাল উপস্থাপনা : লাবনী দে
কলকাতা , ২৫ অক্টোবর: আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই রাজ্যে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন(সার) শুরু হবে। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) বৈঠকে এই ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের নেতৃত্বে কমিশনের তিন সদস্যের ফুলবেঞ্চ। আগামী বছর বিধানসভা ভোট হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি এবং কেরালা -এই চার রাজ্যে ।

সাধারণ মানুষ যাতে ভোটার তালিকা সম্পর্কিত তথ্য সহজে জানতে পারেন তাই প্রতিটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (DEO) এবং ভোটার তালিকা রেজিস্ট্রেশন আধিকারিকদের (ERO) অফিসে SIR হেল্প ডেস্ক স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। SIR-এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরদিনই বহুদলীয় বৈঠক আহ্বান করা হবে যেখানে রাজ্য স্তরে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এবং জেলা স্তরে জেলা শাসকরা নেতৃত্ব দেবেন। এই বৈঠকের সমস্ত সিদ্ধান্ত ও রিপোর্ট নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠাতে হবে। সূত্র জানিয়েছে, সিইও (CEO) ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে এই নির্দেশিকা পৌঁছে দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান জ্ঞানেশ কুমার আগেই জানিয়েছিলেন, “দেশের প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোটার তালিকার বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য একটি বিশেষ ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) চালু করা হবে। এটি একটি চলমান জাতীয় প্রকল্প।”আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিতে পারে নির্বাচন কমিশন। শুধু বাংলা নয়, একসঙ্গে আরও কয়েকটি রাজ্যে এসআইআর করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। প্রত্যেক জেলায় জেলা নির্বাচনি আধিকারীক (DEO) দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সমস্ত বকেয়া কাজ দ্রুত মিটিয়ে ফেলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ডিইওদের।
কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্য নির্বাচন দপ্তরের সিইওর তরফে জেলা নির্বাচনি আধিকারিকদের কাছে বকেয়া কাজ শেষ করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। আজ, শুক্রবার থেকে মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিকের দপ্তর ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে।SIR-সম্পর্কিত কাজে জড়িত সমস্ত কর্মীদের অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে বলে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (DEO) এবং নির্বাচনী নিবন্ধন কর্মকর্তা (ERO) কে SIR-সম্পর্কিত বিষয়গুলির জন্য তাদের অফিসে একটি হেল্প ডেস্ক তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। SIR-এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরদিন সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হবে। রাজ্য স্তরে সিইও নিজে ও জেলা স্তরে জেলাশাসকরা এই বৈঠক ডাকবেন। সভাগুলির সমস্ত আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে।
প্রসঙ্গত ,কিছুদিন আগেই এসআইআরের পর বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এসআইআর এর সেই তালিকা থেকে মৃত ,জাল ও অবৈধ ভোটার ইত্যাদি সব মিলিয়ে প্রাথমিক ভাবে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ যায়। এসআইআর নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রীতিমতো চাপানউতোর শুরু হয়।পরে অবশ্য সেই সংখ্যা কিছুটা কমে। এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছে যার শুনানি এখনও চলছে।বাংলায় SIR কালীন পরিস্থিতি কি রূপ ধারণ করে তা সময় বলবে। তবে বাংলার মানুষ যে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর , হৈহট্টগোলের প্রহর গুনছে ,এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।