“বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়” – আরজিকর কাণ্ডে সঞ্জয় রায় এর আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা : শাস্তি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ মমতার

           পূর্বেই কোর্ট থেকে জানানো হয়েছিল যে, সঞ্জয়ের হয় ফাঁসি নয়তো  যাবজ্জীবন সাজা হবে।আজ সাজা ঘোষণার সময় বিচারক বলেন    এই ঘটনার মামলা বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়। তাই শেষ পর্যন্ত  আমৃত্যু  কারাদণ্ডের সাজা  মিলল সঞ্জয়ের।এর সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও দিতে হবে সঞ্জয় রায়কে। সেই সঙ্গে আদালত রাজ্য সরকারকে মৃতার পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে। তবে  সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণার পরই নির্যাতিতার মা-বাবা এজলাসে উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, আমরা ক্ষতিপূরণ চাই না, আমরা বিচার চাই।

   কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ইতিপূর্বেই  সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল এবং সঞ্চয়ের ফাঁসি হওয়া উচিত বলেও সাওয়াল করেছিল আদালতে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, সঞ্জয় কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার  ৩ টি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, ৬৪ নং ধারায়, মৃত্যুর জন্য দায়ী , ৬৬ নং ধারায় ধর্ষণের শাস্তি এবং ১০৩ নং ধারায় খুনের চার্চ গঠন করা হয়েছিল। তবে এদিন আদালতে পুনরায় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে সঞ্জয়। সে জানান,” আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে ।আমি কিছু করিনি।” এর পাল্টা জবাবে বিচারক অনির্বাণ দাস বলেন,” সিবিআই যা প্রমাণ দিয়েছে তাতে আপনিই দোষী। শাস্তি পেতেই হবে।” অপরদিকে ফের সঞ্জয় জানান, “আমার কথা শুনুন প্লিজ । আমি কিছু করিনি। আমাকে আই পি এস রা যা বলেছেন, তাই বলেছি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা রয়েছে। আমি ধর্ষণ করলে সেটা ছিড়লো না কেন?”প্রসঙ্গত বিভিন্নভাবে এর আগেও আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে সঞ্জয়।

           প্রসঙ্গত গত ৯ আগস্ট আর জি করে ঘটা তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্য তথা দেশকে  প্রবল প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হতে দেখা গেছে যা নজিরবিহীন বলা যায় ।  এই নৃশংস ঘটনা কে কেন্দ্র করে  “রাত দখলের” মতন এক অভূতপূর্ব প্রতিবাদ আন্দোলনের সাক্ষী  থেকেছে গোটা রাজ্য তথা দেশ ।আর  জি কর কাণ্ডে রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তাররাও নারী নিরাপত্তাহীনতা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ ও অনশন আন্দোলনে  সামিল হয়। এই সকল প্রবল প্রতিবাদ আন্দোলনের  একটাই ছিল স্বর — জাস্টিস ফর আর জি কর– বিচার চায় আর জি কর। আজ সেই দিন যে দিনটির জন্য এত প্রতিবাদ এত আন্দোলন।অবশেষে মিলল বিচার। কিন্তু ন্যায় বিচার মিলল কি ? 

প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য , রায়দানের পর মৃতার বাবা বলেন ‘বিচার পাইনি’  । অপরদিকে মৃতার মা-র বক্তব্য বিচারক বললেন এটা  বিরলের মধ্যে বিরলতম মামলা নয়। আমি মনে করি এটা বিরলতম থেকে বিরল।  তাই এটা  সিবিআইয়ের  ব্যর্থতা। সঞ্জয় রায় এক এই ঘটনা ঘটাতে পারে না।  আদালতের এই রায় কে কেন্দ্র করে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি রাজ্যের শাসক দল ও বিরোধীরাও সরব হয়েছেন। জেলা সফরে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সাজা নিয়ে  অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, “আমি তো প্রথমেই ফাঁসির দাবি তুলে রাস্তায় নেমেছিলাম। সবাই নেমেছিল। আগের কয়েকটা ধর্ষণ – খুন মামলায় দোষীদের মৃত্যুদণ্ড শুনিয়েছে আদালত। এটা এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলা ফাঁসি হলে অন্তত মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম। … “

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *