যুগবীক্ষণ নিউজ ব্যুরো ( Dial – 7604097600 ; Whatsapp -7365021506 )

কলকাতা ২ ফেব্রুয়ারী : খবরের শিরোনামে আবার যাদবপুর ,আবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলপন্থী শিক্ষক-অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল পরিবেশ। বৈঠক ছিল ওপেন এয়ার থিয়েটারে। এসএফআই ও অন্যান্য বামসমর্থিত ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে পোস্টার, ব্যানার হাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। গন্ডগোলের সূত্রপাত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে । বৈঠক শুরুর আগেই একপ্রস্ত বিক্ষোভ চলে ছাত্র-ছাত্রীদের । তবে তৃণমূলপন্থী পড়ুয়ারা অন্য রাস্তা দিয়ে ব্রাত্যকে বৈঠকে পৌঁছে দেন।
বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী বেরোতে গেলে, পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে । শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেই প্রবল ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। ভাঙচুর চলে তাঁর গাড়ি এবং সঙ্গে থাকা দুটি পাইলট কারেও । শিক্ষামন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে উত্তেজিত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন কিন্তু এতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। উলটে আরও জটিল আকার ধারণ করে । শুধু ব্রাত্যই নন, পড়ুয়াদের হাতে নিগৃহীত হন ওমপ্রকাশ মিশ্রও । বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে ওয়েবকুপার সদস্যদের বচসাও হয়। ই ধুন্ধুমার পরিস্থিতিতে আহত হন ব্রাত্য বসু ।এসময় বিক্ষোভের মাঝে গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে একজন পড়ুয়া গুরুতর আহত হন, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এতে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে ।বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সোজা এসএসকেএম হাসপাতালে যান । ভাঙচুর করা হয় তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু সমতির অফিস।

প্রশ্ন হল যাদবপুরে এই ঘটনা ঘটাল কারা? পড়ুয়াদের দাবি, এসএফআই আগেই জানিয়েছিল, পয়লা মার্চ শিক্ষামন্ত্রী যাদবপুরে এলে, নির্বাচনের দাবিতে তারা বৈঠকের অনুমতি চেয়েছিল।বিবৃতিতেও স্পষ্ট জানানো হয়, কোনওপ্রকার বিশৃঙ্খলা তৈরি না করে কেবল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে জমায়েত চলবে এসএফআই-এর। অভিযোগ, একদল অতিবামরা আচমকা উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি করে। তাদের বক্তব্য, এসএফআই কোনওভাবেই এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির তৈরী করার জন্য দায়ী নয়।অন্যদিকে অতিবাম সংগঠনগুলির পড়ুয়াদেড় বক্তব্য তাঁরা যখন একগুচ্ছ দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তখন ওয়েবকুপার সদস্যরা আক্রমণ করেন পড়ুয়াদের।

সন্ধ্যা নামতেই যাদবপুরের আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা গড়িয়া-গড়িয়াহাটের রাস্তা অবরোধ করায় । পথচারীরা আটকে পড়েন। ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হলে কয়েকজন যাত্রী পথ অবরোধ তোলার অনুরোধ জানান। কিন্তু তাতে কাজ না হলে যাত্রীরাই সমবেতভাবে চাপ দিয়ে আন্দোলনকারীদের অবরোধ তোলেন । রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোডের দুটি লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।কিন্তু অশান্তির আগুন নেভে নি যাদবপুরে। আহত পড়ুয়াদের দেখতে গিয়ে কেপিসি হাসপাতালে একদল পড়ুয়ার দ্বারা আক্রান্ত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। রাতে যাদবপুর ক্যাম্পাসের তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে । দমকল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও অনেকে মনে করছেন এই অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে তৃণমূল বিরোধী কোনও ছাত্র সংগঠন থাকতে পারে।