যুগবীক্ষণ ডিজিটাল নিউজ ডেস্ক ( Dial- 7604097600; Whatsapp – 7365021506 )
কলকাতা , ৯ মার্চ

সালটা ২০০০।নাইরোবির মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল।টিম ইন্ডিয়ার প্রতিপক্ষ নিউজ়িল্যান্ড।তৎকালীন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শতরানে ট্রফি জয়ের আশায় টগবগ করে ফুটছে ভারতীয় সমর্থকরা। কিন্তু তাতে জল ঢেলে দেন ক্রিস কেয়ার্নস। একাই নিউ জ়িল্যান্ডকে জিতিয়েছিলেন তিনি। স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল সৌরভদের।২০২৫ এ সেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল। প্রতিপক্ষ সেই কিউইরা ! তাই আপামর ক্রিকেটপ্রেমী ভারতবাসীর মনে দ্বন্দ্ব ছিল পারবে কি টিম ইন্ডিয়া ২৫ বছর আগের সেই হারের বদলা নিতে ? নাকি ইতিহাসের করুন পুনরাবৃত্তি ঘটবে? কিন্তু ২৫ এর রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হলো না — বরং টিম ইন্ডিয়া নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে মধুর বদলা নিল। এই নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের হ্যাট্রিক করল ভারত। এর আগে ২০০২ সালে সৌরভ গাঙ্গুলী এবং ২০১৩ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয় টিম ইন্ডিয়া।
রবিবার দুবাইয়ের মাঠে নিউজ়িল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারাল ভারত । তবে খেলা চলাকালীন এক সময় ভারতের জয় যতটা সহজ মনেহয়েছিল তা হল না।ম্যাচটা হাড্ডাহাড্ডি পর্যায়ে পৌঁছালে নিউজ়িল্যান্ড যথেষ্ট লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত হার মানল।রোহিত শর্মারা অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হলেন । রবিবার নিউজিল্যান্ড টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে সাত উইকেটে ২৫১ রান তোলে । যদিও ইনিংসের শুরুতে মনে হয়েছিল কিউইরা রানের পাহাড় গড়বে।পরবর্তীতে ভারতীয় স্পিনারদের ঘূর্ণিতে প্রবল চাপে পড়ে হাঁসফাঁস করতে থাকেন তাঁরা। কিন্তু মাইকেল ব্রেসওয়েলের ৪০ বলে অপরাজিত ৫৩ রানের সুবাদে ২৫০ রানের গণ্ডি অতিক্রম করতে সক্ষম হয় । কিউয়িদের হয়ে ১০১ বলে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন ডারিল মিচেল এবং ২৯ বলে ৩৭ রান করেন রাচিন।
ভারতের হয়ে ১০ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে ২ টি উইকেট নেন স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। কুলদীপ যাদব ১০ ওভারে ৪০ রান দিয়ে নেন ২ টি উইকেট । রবীন্দ্র জাদেজা ১০ ওভারে ৩০ রান দিয়ে এক উইকেট পান । অক্ষর প্যাটেল ৮ ওভারে মাত্র ২৯ রান খরচ করেন কিন্তু কোনও উইকেট পান নি । তবে চ্যাম্পিয়ন্স ফাইনালে ভারতীয় পেসাররা তুলনায় কিছুটা অসফলই বলা যায়। ৯ ওভারে ৭৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন মহম্মদ শামি।অপর পেসার হার্দিক পান্ডিয়া ৩ ওভারে ৩০ রান খরচ করেন।

টিম ইন্ডিয়ার শুরুটা দুর্দান্ত করেন রোহিত শর্মারা।স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন ভারত অধিনায়ক।আরেক ওপেনার শুভমন গিল সেইরকম ছন্দে না থাকলেও রোহিত কার্যত একাই ইনিংস টানছিলেন। দু’জনে মিলে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রান তুলে ফেলেন। অর্ধশতরান করে ফেলেন রোহিত। বিনা উইকেটে ১০০ রানের গণ্ডিও পেরিয়ে যায় ভারত।কিন্তু ১৯ তম ওভারে গিলের নিশ্চিত বাউন্ডারির শটে গ্লেন ফিলিপস অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরেন এবং খেলার মোড় ঘুরে যায় । সেখান থেকেই হোঁচট শুরু টিম ইন্ডিয়ার । ১৯ তম ওভারে ভারতের স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ১০৫ রান। সেখানে ২৭ ওভারের শুরুতে ১২২ রানে ৩ উইকেট ।মাত্র ১ রানে আউট হয়ে যান টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং স্তম্ভ বিরাট কোহলি।প্রচন্ড চাপের মুখে রান তুলতে বড় শট মারতে গিয়ে ৭৬ রানে আউট হয়ে যান রোহিত।এরপর রীতিমতো চেইপ পরে যায় ভারত। শ্রেয়স আইয়ার, অক্ষর প্যাটেলরা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই এর ফলস্বরূপ শেষপর্যন্ত ছয় বল বাকি থাকতেই চার উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় ভারত।

ইতিহাসে প্রথমবার পরপর দুটি আইসিসি ট্রফি ডিতল ভারতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল। এতদিন পর্যন্ত কখনও সিনিয়র পর্যায়ে ভারতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল পরপর দুটি আইসিসি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়নি। সেটাই এবার করে দেখালেন রোহিতরা । গত বছর জুন মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই অধিনায়ক হিসাবে আরও একটি আইসিসি ট্রফি জিতলেন রোহিত। কোচ হিসাবে গৌতম গম্ভীরও যথেষ্ট সফল । নিজের প্রথম আইসিসি ট্রফিতেই দলকে চ্যাম্পিয়ন করলেন।