ভারতের প্রথম মনুষ্যবাহী গভীর মহাসাগর মিশন : এবারে সফর সমুদ্রের তলদেশে

তিস্তা মন্ডল এর প্রতিবেদন

এবারে পাড়ি সমুদ্রের তলদেশে। সুগভীর সমুদ্রের তলদেশে সূর্যের আলো যেখানে পৌঁছায় না সেখানে আলো-আঁধারিতে কি লুকিয়ে আছে তা উদ্ঘাটন করতেই বিজ্ঞানীদের পরবর্তী পদক্ষেপ এই সমুদ্রের তলদেশ যাত্রা। যে সমুদ্রযানটিতে করে পাড়ি দেওয়া হবে সেদিন নাম ‘মৎস্য ৬০০০’। ভূবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন এই ‘মৎস্য ৬০০০’ সমুদ্রের ৬ হাজার মিটার গভীরে ১২ ঘন্টা কাজ করতে সক্ষম। এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে আগানোর সাথে সাথে , বিপদকালীন পরিস্থিতিতেও ৯৬ ঘণ্টা পর্যন্ত গভীরে থাকতে সক্ষম এই সমুদ্রযান। এছাড়াও এই সমুদ্রযানের ভিতরে বিজ্ঞানীদের লাইফ সাপোর্ট, নেভিগেশন সিস্টেম, রোবোটিক আর্ম , নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা ইত্যাদি থাকছে। সুগভীর মহাসাগরের তলদেশে জীববৈচিত্র, খনিজের সন্ধানের পাশাপাশি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির অনুসন্ধান সহ জলে লবণ দূর করার জন্য ও এই সমুদ্র সফর এক নতুন দিশার সন্ধান দিতে পারে বলে জানাচ্ছেন, ভূবিজ্ঞানীরা।

এই সমুদ্রযানে করে সমুদ্রের তলদেশে পাড়ি দেওয়ার তরজোড় শুরু করেছে ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওশান টেকনোলজি’। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছেন, ‘মৎস্য ৬০০০’ – এর তৈরি পর্ব প্রায় শেষের দিকে এই বছর এর অক্টোবরের শেষে অথবা নভেম্বরের মাঝামাঝি জলে নামিয়ে পরীক্ষা করা হবে এটিকে। পর পর কিছু পরীক্ষা করা হবে এই সমুদ্রযানের সেই পরীক্ষা যদি যথাযথভাবে সফল হয় তবে আগামী বছর ২০২৫ এর শেষের দিকে ভারতীয় ইতিহাসের আরেকটি মাইল ফলক সৃষ্টি হতে চলেছে অর্থাৎ ,’মৎস্য ৬০০০’ করে ভারত মহাসাগরের তলদেশে পাড়ি দিতে চলেছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। পূর্বের ইতিহাস দেখলে এখনো পর্যন্ত চীন, ফ্রান্স , জার্মানি , রাশিয়া, জাপান , দক্ষিণ কোরিয়া মহাসাগরের তলদেশে অভিযান করেছিল। ভারতের এই অভিযানের মাধ্যমে যে, তথ্যগুলি পাওয়া যাবে তা পরবর্তী দিনে বিজ্ঞান গবেষণার অন্যান্য শাখা গুলিতেও কাজে লাগতে পারে, বা নতুন দিকের সন্ধান দিতে পারে।

‘ মৎস্য ৬০০০’ সমুদ্রযানে মধ্য ভারত মহাসাগরে গবেষণায় নামছে ভারত। এই সমুদ্রযান ৬ হাজার মিটার গভীরে পৌঁছে যাবে। প্রথমে চেন্নাই হারবার এর কাছে সমুদ্রের ১৫ মিটার গভীরে নামিয়ে পরীক্ষা করা হবে এই সমুদ্রযানের , এবং সেই পরীক্ষাটি যদি সফল হয় তাহলে একে একে আরো পরীক্ষা করা হবে। মহাসাগরের তলদেশে ৬‌ হাজার মিটার গভীরে যে জলের চাপ তা যাতে সহ্য করতে পারে এমন ভাবেই বানানো হয়েছে এই সমুদ্রযান। মূলত ভগবান বিষ্ণুর দশম অবতারের মধ্যে এক অবতার ‘মৎসাবতারের’ নামেই নামকরণ করা হয়েছে ভারতের এই সমুদ্রযান ‘মৎস্য ৬০০০’ – এর।



–: এক নজরে এই ‘মৎস্য’ অভিযান :–

অভিযানের নাম : মিশন সমুদ্রযান
লক্ষ্য: মধ্য ভারত মহাসাগরের ৬০০০ মিটার গভীরে যাওয়া এবং জীব বৈচিত্র্য, খনিজ, পুনর্নবীকরণ যোগ্য শক্তি , জলের লবণ দূর করার উপায় সন্ধান।
বাহন : মৎস্য ৬০০০ (জলযান)
বরাদ্দ অর্থ :৮ হাজার কোটি টাকা
পরিচালনায় : ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজি (এনআইওটি)
পূর্বে যারা : চীন, ফ্রান্স , রাশিয়া, জার্মানি ,জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *