কড়া নিরাপত্তার মোড়কে খুলল সাউথ কলকাতা ল কলেজ : প্রশ্ন কেন এত দেরিতে টনক নড়ল

কলকাতা ,৭ জুলাই : খুলে গেল সাউথ কলিকাতা ল কলেজের বন্ধ গেট । কলেজে ক্যাম্পাসের মধ্যেই গণধর্ষণের মতো পাশবিক,বর্বরোচিত ঘটনাটির পর বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল কলেজের গেট।ঘটনার ১১ দিন পর পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে আজ থেকে ফের খুলে গেল কলেজের গেট। কিন্তু এবার পড়ুয়াদের জন্য চালু হল একগুচ্ছ নিয়ম। সূত্রের খবর অনুযায়ী , কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনারের পারমিশন নিয়ে আজ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য খোলা থাকবে কলেজ। এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কলেজ ক্যাম্পাসে থাকতে পারবেন কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীরা। এরপর কলেজগেটে তালা দেওয়ার আগে দায়িত্ব থাকবে প্রধান রক্ষীর। গোটা কলেজ ক্যাম্পাস নিখুঁতভাবে কারোর উপস্থিতি নেই নিশ্চিত হয়ে বন্ধ করতে হবে কলেজের গেট।

এই বিধি নিষেধের মধ্যে জানানো হয়েছে আগামী ৮ তারিখ চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্ররা আসবে কলেজে এবং ৯ তারিখ ষষ্ঠ সেমিস্টারের পড়ুয়ারা , ১০ তারিখ অষ্টম সেমিস্টারের অনার্স এবং জেনারেল পড়ুয়া দের কলেজে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফর্ম সহ অন্যান্য অফিসিয়াল কাজের জন্য সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত কলেজের ডকুমেন্ট ও আইডি কার্ড সহ তাদের কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। এছাড়াও কলেজ ক্যাম্পাসে থাকাকালীন প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের পুরো সময়টা আইডি কার্ড পড়ে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে কোন রকম অফিসিয়াল কাজ বা পঠন-পাঠন বাদে কলেজে প্রবেশের ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের উপর থাকবে কড়া নিষেধাজ্ঞা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ২৫শে জুন কসবা ল কলেজের গার্ড রুম নিয়ে গিয়ে সেই কলেজেরই এক আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ওই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মনজিৎ মিশ্র এবং সেই কলেজেরই আরও দুই পড়ুয়া জাইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায় এর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটার পরের দিন কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তরুণী এরপর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেন পুলিশ। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আশায় উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি , উত্তর থেকে দক্ষিণ সমগ্র জায়গাতে এই বর্বরোচিত ঘটনাটির প্রতিবাদে বিরোধীদের দেখা গেছে প্রতিবাদী মিটিং মিছিল।তবে এক্ষেত্রে অনেক প্রশ্নের মাঝে সবার আগে যে প্রশ্নটি উঠে আসছে সেটি হল এই সকল সাধারণ সর্কতামূলক পদক্ষেপ কি আগে নেওয়া যেত না?তাহলে হয়ত কলেজের ভিতরে ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা এড়ানো যেত।

কসবা ল কলেজের নির্যাতিতা সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে অভিযুক্তদের সকল শাসানি , নির্যাতনের তুলে রাখা ছবি নিয়ে ব্ল্যাক মেলের হুমকি উপেক্ষা করেও প্রকাশ্যে এনেছেন এবং প্রশাসনের দ্বারস্থহয়েছেন। কিন্তু রাজ্য ব্যাপী বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের অনভিপ্রেত ঘটনার সম্মুখীন হয়ে হয় বহু পড়ুয়াকে বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। কসবা ল কলেজের ঘটনার পর প্রশাসন আদৌ কি রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রকৃত অর্থে ‘মনোজিৎ’ মডেল , ‘দাদা’ কালচার মুক্ত করতে নড়েচড়ে বসবে নাকি সবকিছুই সামনে বিধানসভা ভোটের পরিপ্রেক্ষিতে সাময়িক ? সময় বলবে বৈকি।
:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *