যুগবীক্ষণ ডিজিটাল নিউজ ডেস্ক :
Report : Tista Mondal ● Digital Editing : Laboni Dey

কলকাতা, ১৩ অক্টোবর:কলকাতায় বাড়ছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর অনুযায়ী চলতি বছরের শুরু থেকে গত অগস্ট মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত শহরে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছিলেন ১,১৫৬ জন। কিন্তু তার পর থেকে গত ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ম্যালেরিয়া রিপোর্ট পজ়িটিভি এসেছে ৩,০৭৪ জনের। অর্থাৎ,সাম্প্রতিক বিগত প্রায় দু’মাসে দ্বিগুণেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছেন । এর মধ্যে প্রায় এক হাজার জন আক্রান্ত হয়েছেন শেষ চার সপ্তাহে।
ম্যালেরিয়ার এই চিতার বেগে ছড়িয়ে পড়ার কারণ কি ? বিশেষজ্ঞরা এর নেপথ্যে মূলত তিনটি কারণকে দায়ী করছেন। প্রথম, আবহাওয়ার তারতম্য। দ্বিতীয়ত, একাংশের মধ্যে সচেতনতার অভাব এবং তৃতীয়ত, নির্দেশিকা জারির পরেও পুজো উদ্যোক্তাদের মশাবাহিত রোগ নিয়ে সতর্ক না হওয়া।যদিও শহরের বাসিন্দাদের একাংশ পুরসভার ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছেন। তাঁরা এই প্রকোপ বৃদ্ধিতে দায়ী করছেন পুরসভার পর্যাপ্ত নজরদারি না–থাকাকে ।
পতঙ্গবিদদের বক্তব্য, কলকাতার বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে সারা বছর ধরেই ম্যালেরিয়া হচ্ছে। কারণ কলকাতার বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। তাই সচেতনতা বাড়ানো জরুরি বলে তাঁরা মনে করেন। তাঁদের পরামর্শ, প্রশাসনেরও উচিত বছরভর নজরদারি জারি রাখা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মোতে বছরের শুরু থেকে অগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কম ছিল। সম্ভবত সে কারণে নজরদারিতে খানিকটা শিথিলতা দেখা দিয়েছিল । তাই তথাকথিক ‘পিক–সিজ়নে’ ম্যালেরিয়া স্বাভাবিকভাবেই মাথাচাড়া দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ম্যালেরিয়ার মশা মূলত কামড়ায় রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টের মধ্যে। পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘ম্যালেরিয়ার বাহক স্ত্রী অ্যানোফেলিস মশার লার্ভা নীচের তলা থেকেও উপরের তলায়, ছাদে বেশি জন্মায়।’ ক্লোরিন মিশ্রিত জলের তুলনায় বৃষ্টির জল, বেশি আলোর খোলা জায়গা পছন্দ করে। তাই শহরের বিভিন্ন জায়গায় যেখানে বড় পরিসরে বৃষ্টির জল জমে বা জমার সম্ভাবনা থাকে, সেই সব জায়গায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত রাসায়নিকও স্প্রে করা হচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণের তুলনায় উত্তর এবং মধ্য কলকাতাতেই ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি।গত বছর আক্রান্তের হিসেবে ৬৯টি ওয়ার্ডকে ‘অতি ম্যালেরিয়া–প্রবণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল পুরসভা। তবে এ বার ১১টি ওয়ার্ডকে ‘স্পর্শকাতর’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের নির্মীয়মাণ বিল্ডিংয়ে বাড়তি নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।